From a Doctor

অতিরিক্ত ঘাম, বা হাইপারহাইড্রোসিস (hyperhidrosis) 

অতিরিক্ত ঘাম কেন হয়, প্রতিকার ও চিকিৎসা

আপনার আশেপাশের তাপমাত্রা বা আপনার কাজের উপর ভিত্তি করে শরীর ঘেমে যাওয়া খুব স্বাভাবিক । কিন্তু অতিরিক্ত ঘাম দৈনিক কার্যক্রম ব্যাহত করতে পারে এবং বিব্রতির কারণ হতে পারে।

অতিরিক্ত ঘাম, বা হাইপারহাইড্রোসিস (hyperhidrosis)  আপনার পুরো শরীর বা কেবলমাত্র কয়েকটি অংশ যেমন আপনার হাতের পাতা, পায়ের পাতা, বগল বা মুখকে প্রভাবিত করে। 

কেন হয়?

বেশিরভাগ সময় এটার কোন কারন খুজে পাওয়া যায় না। এই সমস্যা বংশগত হতে পারে আবার কিছু রোগের কারনে হতে পারে। যেমন- 

  • অ্যাক্রোম্যাগালি
  • ডায়াবেটিস
  • জ্বর
  • হাইপারথাইরয়েডিজম
  • ইনফেকশন
  • লিউকেমিয়া বা রক্তের ক্যান্সার
  • লিম্ফোমা, এক ধরনের ক্যান্সার
  • ম্যালেরিয়া
  • ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেমন কিছু বিটা ব্লকার এবং এন্টিডিপ্রেসেন্টস এর কারনে।
  • মেনোপজ
  • ফিওক্রোমোসাইটোমা (অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি টিউমার)
  • যক্ষা

কখন ডাক্তারের সাথে দেখা করবেন?

  • যদি আপনার ভারী ঘামের সাথে হালকা মাথা, বুকে ব্যথা বা বমি বমি ভাব দেখা দেয় তবে সাথে সাথে হাসপাতালে যান ।
  • আপনি হঠাৎ করে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামতে শুরু করলে।
  • ঘাম আপনার দৈনন্দিন রুটিন ব্যাহত করলে।
  • কোন কারন ছাড়াই রাতে অতিরিক্ত ঘামলে
  • ঘামের কারণে মানসিক অশান্তির সৃষ্টি হলে।

আপনি কি করবেন?

  • অ্যান্টিপারস্পায়ারেন্ট ব্যবহার করুন। আপনার ত্বকে যে পরিমাণ ঘাম হয় তা হ্রাস করে। এটি হালকা হাইপারহাইড্রোসিসে সহায়তা করতে পারে।
  • প্রতিদিন গোসল করুন। নিয়মিত গোসল করার পর নিজেকে পুরোপুরি শুকিয়ে নিন, বিশেষত আঙ্গুলের মধ্যে এবং বগলের অংশ।
  • প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে তৈরি জুতা এবং মোজা পড়ুন। যেসব জুতা মোজায় প্রচুর ছিদ্র থাকে সেগুলো ব্যবহার করুন। মোজা সুতি পাতলা হলে ভালো, চামড়ার জুতা পড়া ভালো।
  • আপনার মোজা নিয়মিত পরিবর্তন করুন। দিনে একবার বা দু’বার মোজা পরিবর্তন করুন । প্রতিবার আপনার পা ভালভাবে শুকিয়ে নিন। ঘাম শোষণ করতে পাউডার ব্যবহার করুন।
  • কাজ অনুসারে পোশাক পড়ুন। সুতি কাপড় পরিধান করুন যা আপনার ত্বকে শ্বাস নিতে দেয়। আপনি যখন ব্যায়াম করেন, তখন স্পোর্টস ওয়্যার পড়ুন।
  • যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং বায়োফিডব্যাকের মতো কৌশলগুলি চেষ্টা করুন। এগুলি আপনাকে ঘামের কারণ হয়ে ওঠা চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে সহায়তা করতে পারে।

কিভাবে চিকিৎসা করা হয়ঃ

প্রথমেই কারন খুজে বের করার চেষ্টা করা হয় এবং সেগুলোর চিকিৎসা করা হয়। কোন কারন না পেলে ঘাম কমানোর জন্য কিছু ওষুধ, ক্রিম ইত্যাদি দেয়া হয়। এছাড়া উন্নত চিকিৎসা হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় মাইক্রোওয়েভ থেরাপি ও কিছু ধরনের সার্জারিও করা হয়। 

 

লিখেছেন,
ডা কামরুল ইসলাম শিপু

আমাদের প্রতিটি লিখা চিকিৎসক দ্বারা লিখিত এবং সম্পাদিত। এই ওয়েবসাইটে চিকিৎসক/ডাক্তার বলতে নুন্যতম এম বি বি এস বা বি ডি এস ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের বোঝানো হয়। এই ওয়েবসাইটের সকল লেখা সচেতনতামূলক এবং চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়