From a Doctor

অ্যাজমা বা হাঁপানি

অ্যাজমা বা হাঁপানি

অ্যাজমা বা হাঁপানি বাংলাদেশে বেশ কমন একটি রোগ। এ রোগে শ্বাসনালীতে প্রদাহের কারনে রোগীর তীব্র শ্বাসকষ্ট হয়। অ্যাজমা যেকোন বয়সে হতে পারে। এটা থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়ার কোন চিকিৎসা না থাকলে বিভিন্ন ওষধ ও জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে এ রোগ সহনীয় পর্যায়ে রাখা যায়। 

লক্ষণসমূহঃ

  • শ্বাসকষ্ট।
  • কাশি (রাতে ঘুমানোর সময় কাশি বেড়ে যায়)।
  • শারীরিক কাজ করলে, দৌড়ালে, সিড়ি দিয়ে উঠলে, খেলা বা শারিরিক ব্যায়ামে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
  • বুক ভারী লাগা
  • শ্বাস নেওয়ার সময় বাঁশির মতো আওয়াজ হওয়া

কেন হয়?

মূল কারণ এখনো অজানা। তবে বংশগতি, পরিবেশ দূষণ  ইত্যাদির অ্যাজমার সাথে সম্পর্ক আছে। মানে আপনার পরিবারের কারো থাকলে আপনার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

শ্বাসনালীর প্রদাহের মূল বিভিন্ন উপাদানের সংস্পর্শে আসলে হতে পারে। এগুলোকে অ্যাজমার ট্রিগার বলা হয়। 

যেমন-

  • ধূলিকণা,প্রাণীর পশম 
  • পরাগরেণু
  • ধোঁয়া
  •  ঠান্ডা বাতাস
  • শারীরিক ব্যায়াম
  • সর্দি, কাশি
  • ওষুধ – বিশেষত আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসপিরিনের মতো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ব্যথানাশক
  • মানসিক চাপ 
  • আবহাওয়া – যেমন তাপমাত্রা, ঠান্ডা বাতাস, বাতাস, ঝড়ো ঝড়, তাপ এবং আর্দ্রতার আকস্মিক পরিবর্তন

আপনার হাঁপানি ট্রিগার গুলি শনাক্ত করা এবং এড়ানো আপনার লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখার মূল উপায়।

অ্যাজমা কিভাবে নিশ্চিত করা হয়ঃ 

চিকিৎসক আপনার লক্ষণ শুনে ও আপনাকে পরীক্ষা করেই বলে দিতে পারেন আপনার অ্যাজমা হয়েছে কি না। কিন্তু পুরোপুরি নিসচিত হওয়ার জন্য আপনার কয়েকটি টেষ্ট করানো লাগতে পারে। এগুলো বুকের এক্সরে থেকে শুরু করে আপনার ফুসফুসের বিভিন্ন অবস্থা দেখার জন্য বিভিন্ন টেস্ট করা লাগতে পারে। এছাড়া রক্তের পরীক্ষাও করানো লাগতে পারে।  

চিকিৎসাঃ

আপনাকে ইনহেলার সহ কিছু ঔষুধ দেয়া হবে। দুই ধরনের ইনহেলার দেয়া হতে পারে। ইনহেলার গুলোর ব্যবহারবিধি খুবই গুরুতবপূর্ণ। এগুলো ভালোভাবে ব্যবহার না করতে পারলে কোন কাজ করবে না। 

ইনহেলার দুই ধরনের-

  • রিলিভার বা উপশমকারী মানে যখন শ্বাসকষ্ট হবে তখন দিবেন
  • প্রিভেন্টার বা প্রতিরোধক যেটা আপনার শ্বাসনালীতে সংক্রমণ রোধে কাজ করে।

আপনি কি করবেন?

  • অ্যাজমার ওষুধ বা ইনহেলার সবসময় হাতের কাছে রাখুন।
  • নিয়মিত চেকআপ করাবেন।
  • ঠাণ্ডা খাবার আইসক্রিম ইত্যাদি খাবেন না
  • ধূমপান কোনভাবেই করা যাবে না।
  • ধুলোবালি বা অন্য ট্রিগারার এড়িয়ে চলুন
  • বালিশ লেপ তোষক-পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন।
  • বাড়িতে পোষা প্রাণী (কুকুর, বিড়াল) থাকলে পরিচ্ছন রাখতে হবে।
  • মানসিক চাপ, উৎকণ্ঠা এড়িয়ে চলতে হবে।

সতর্কতাঃ

অ্যাজমা হঠাৎ করে মারাত্মক হয়ে যেতে পারে। এ অবস্থাকে অ্যাজমা অ্যাটাক বলা হয়। এই অবস্থা কি করবেন সেটা নিয়ে আলাদা বিস্তারিত পুড়ুন।