অ্যাথলেট ফুট বা পায়ের ছত্রাক সংক্রমন একটি ছত্রাকজনিত ত্বকের সংক্রমণ যা সাধারণত পায়ের আঙ্গুলের মধ্যে হয়।অনেকেরই অনেকক্ষণ ধরে টাইট–ফিটিং জুতা পড়লে পায়ে খুব ঘাম হয় যেটা এই রোগের উৎপত্তির কারণ।
অ্যাথলেট ফুটের লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি, আঁশযুক্ত ফুসকুড়ি। এটি সংক্রামক এবং দূষিত মেঝে, তোয়ালে বা পোশাকের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
এটি অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ দিয়ে চিকিত্সা করা যেতে পারে, তবে সংক্রমণ বার বার ফিরে আসে।

লক্ষণ
অ্যাথলেট ফুট এক বা উভয় পায়ে হতে পারে। সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হল:
- আঙুলের মাঝখানে আঁশযুক্ত, খোসা উঠানো বা ফাটা চামড়া
- চুলকানি, বিশেষ করে জুতা এবং মোজা খোলার পর
- আপনার ত্বকের রঙের উপর নির্ভর করে স্ফীত ত্বক যা লালচে, বেগুনি বা ধূসর রঙ দেখাতে পারে
- জ্বলণ বা যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতি
- ফোস্কা
- কখনও কখনও আপনার পায়ের ত্বকে ফাটল বা রক্তপাত হতে পারে।
যদি এরোগের চিকিৎসা করা না হয়, তাহলে সংক্রমণ পায়ের নখে ছড়িয়ে নখের ইনফেকশন করতে পারে।
কারণসমূহ
অ্যাথলেট ফুট এক ধরনের ছত্রাক(ডার্মাটোফাইট) দ্বারা হয় যা দাদ এবং অন্যান্য ছত্রাকজনিত চুলকানিরও কারণ। স্যাঁতসেঁতে মোজা,জুতা এবং উষ্ণ , আর্দ্র অবস্থা ছত্রাক সংক্রমনে ভুমিকা রাখে।
অ্যাথলিট ফুট একটি সংক্রামক রোগ এবং সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা তার ব্যবহৃত তোয়ালে, মেঝে এবং জুতার সংস্পর্শ থেকে ছড়াতে পারে।পায়ের সংক্রামিত অংশগুলি আঁচড় বা খুব বেশি চুলকালে এটা পা থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ঝুঁকির কারণ
- ঘন ঘন আবদ্ধ জুতা পরা
- পা প্রচন্ড ঘামে
- ছত্রাক আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে ম্যাট, পাটি, বিছানার চাদর, কাপড় বা জুতা শেয়ার করেন
- পাবলিক এলাকায় খালি পায়ে হাঁটেন যেখানে সংক্রমণ সহজেই ছড়াতে পারে, যেমন লকার রুম,স্পা, সুইমিং পুল, কমন গোসলখানা
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
ওভার–দ্য–কাউন্টার অ্যান্টিফাঙ্গাল দিয়ে চিকিৎসা শুরু করার দুই সপ্তাহের মধ্যে যদি আপনার পায়ের ফুসকুড়ি না কমে, তাহলে ডাক্তারের কাছে যান।
আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং যে আপনার অ্যাথলেট ফুট হয় তাহলে তারাতারি ডাক্তারকে দেখান।
জটিলতাঃ
অ্যাথলেট ফুট সংক্রমণ শরীরের অন্যান্য উষ্ণ, আর্দ্র অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। পা থেকে কুঁচকিতে(গ্রোইনে)সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ছত্রাক হাত বা তোয়ালের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যায়।
প্রতিরোধঃ
যা যা করণীয় –
- পা ধোয়ার পর শুকিয়ে নিন, বিশেষ করে পায়ের আঙ্গুলের মাঝখানে
- পায়ের জন্য একটি পৃথক তোয়ালে ব্যবহার করুন এবং এটি নিয়মিত ধুয়ে নিন
- বাড়িতে বেশি সময় জুতা পড়া থেকে বিরত থাকুন
- প্রতিদিন পরিষ্কার মোজা পড়ুন – সুতির মোজা সবচেয়ে ভাল
যা যা করবেন না
- আক্রান্ত ত্বক আঁচড়াবেন না – এটি আপনার শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পরতে পারে
- খালি পায়ে হাঁটবেন না – চেঞ্জিং রুম এবং শাওয়ারের মতো জায়গা স্যান্ডাল পরুন
- অন্যদের সাথে তোয়ালে, মোজা বা জুতা শেয়ার করবেন না
- পরপর ২ দিনের বেশি একই জোড়া জুতা পরবেন না
- এমন জুতা পরবেন না যা পরলে আপনার পায়ে গরম লাগে এবং পা ঘামে
অ্যাথলেট ফুট ফিরে আসা রোধ করার জন্য ডাক্তার প্রদত্ত চিকিৎসা শেষ হওয়ার পরেও দৈনন্দিন জীবনে উপরোক্ত পরামর্শগুলো অনুসরণ করে চলুন।
লিখেছেন,
মালিহা জান্নাত
এম বি বি এস স্টুডেন্ট
আমাদের প্রতিটি লিখা চিকিৎসক দ্বারা লিখিত ও সম্পাদিত। এই ওয়েবসাইটে চিকিৎসক বলতে নুন্যতম এম বি বি এস ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের বোঝানো হয়। এই ওয়েবসাইটের সকল লেখা সচেতনতামূলক এবং চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়।