‘আমার ব্লাড প্রেসার আছে’ , আমরা অনেকেই কমবেশি এই কথা কারো না কারো কাছ থেকে শুনেছি। এর মাধ্যমে মানুষ হাই ব্লাড প্রেসার বা হাইপারটেনশন বোঝায়। সাম্প্রতিক সময়ে হাইপারটেনশনের রোগীর সংখ্যা আশংখাজনকভাবে বাড়ছে।
উচ্চরক্তচাপ থাকলে সাধারণত তেমন লক্ষণীয় উপসর্গ দেখা যায় না ।
কিন্তু যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে এটি হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো গুরুতর সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে ।
রক্তচাপ কি :
রক্তচাপ দুইটি সংখ্যা দিয়ে রেকর্ড করা হয়। এগুলো হলো :
১.সিস্টোলিক রক্তচাপ
২.ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ।
সিস্টোলিক রক্তচাপ হল এমন একটি চাপ যা আপনার হৃৎপিন্ড দেহের চারপাশে কতটুকু রক্ত পাম্প করে তার পরিমাণ প্রকাশ করে ।
ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ হল রক্তনালী রক্তপ্রবাহের বিপরীতে কতটুকু প্রতিরোধ প্রদান করে তার পরিমাণ।
লক্ষনসমূহঃ
উচ্চরক্তচাপ থাকলে সাধারণত তেমন লক্ষণীয় উপসর্গ দেখা যায় না । কিন্তু মাঝে মাঝে অতি বেশি উচ্চরক্তচাপে কিছু লক্ষন দেখা যেতে পারে। যেমন-
- মাথাব্যথা
- চোখে ঝাপসা দেখা
- নাক ফিয়ে হঠাত রক্ত পড়া
- নিঃশ্বাসের দুর্বলতা
কখন বলবেন আপনার উচ্চ রক্তচাপ আছে?
উচ্চ রক্তচাপকে 140/90mmHg বা এর বেশি হিসেবে বিবেচনা করা হয় । আদর্শ রক্তচাপ সাধারণত 120/80 mmHg এই রেঞ্জের মধ্যে বলে মনে করা হয় । ভিন্ন ব্যক্তির জন্য সাধারণ রক্তচাপ কিছুটা ভিন্ন হবে। আপনার কাছে যা কম বা বেশি বলে মনে হবে তা অন্য কারো জন্য স্বাভাবিক হতে পারে ।
আপনার রক্তচাপ বেশি কিনা তা খুঁজে বের করার একমাত্র উপায় হলো রক্তচাপ পরীক্ষা করা। ৪০ বছরের বেশি বয়স্কদের নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
উচ্চ রক্তচাপ কেন হয় ?
উচ্চ রক্তচাপ কেন হয় তার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি তবে কিছু বিষয় আছে যা আপনার উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে :
- অতিরিক্ত লবণ খাওয়া
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ
- অপর্যাপ্ত ঘুম
- পর্যাপ্ত ফল এবং শাকসবজি না খাওয়া
- পর্যাপ্ত ব্যায়াম না করা
- অতিরিক্ত ওজন
- অতিরিক্ত কফি পান করা
- ধূমপান
- মদ্যপান
- বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে
- নিকট আত্মীয়ের মধ্যে কারো উচ্চরক্তচাপ থাকলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি?
দীর্ঘদিন যাবৎ উচ্চরক্তচাপ থাকলে তা আপনার শরীরে কিছু মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে যা আপনার জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়াতে পারে,যেমন :
- হূদরোগ
- স্ট্রোক
- কিডনির ব্যাধি ইত্যাদি ।
চিকিৎসা:
ব্যক্তিবিশেষে চিকিৎসার ধরন আলাদা হয়ে থাকে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী চললে আপনি আপনার রক্তচাপ নিরাপদ মাত্রায় রাখতে পারবেন।
নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মেনে চলা উচিত :
১.জীবনযাত্রার পরিবর্তন:
- অতিরিক্ত লবণ না খাওয়া
- ধূমপান বন্ধ করা
- ওজন বেশি হলে ওজন হ্রাস করা
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- কফি কম পান করা ইত্যাদি।
২. নিয়মিত ওষূধ সেবন:
খুব বেশি উচ্চরক্তচাপ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এক বা ততোধিক ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে ।
আপনি কোন ওষুধ খাবেন তা নির্ভর করে আপনার উচ্চ রক্তচাপ কত বেশি,আপনার বয়স এবং অন্যান্য কিছু বিষয়ের উপর ।
সতর্কতাঃ
রেজিষ্টার্ড চিকিৎসক ছাড়া আর কারো কথায় বা ফার্মেসীর দোকানীদের প্ররোচনায় কখনই ব্লাড প্রেসারের ঔষধ খাবেন না।