From a Doctor

ডেন্টাল ক্যারিস বা দাঁতের ক্ষয়রোগ

ডেন্টাল ক্যারিস বা দাঁতের ক্ষয়রোগ

ডেন্টাল ক্যারিস কি?

ডেন্টাল ক্যারিস হল ব্যাকটেরিয়া বা অনুজীব দ্বারা সংক্রামিত দাঁতের এক ধরনের রোগ যার ফলে দাঁতের ক্ষয় হয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই  গর্ত হয়ে যায়।

কেন হয়?

আমাদের মুখগহ্বর অনেক ব্যাকটেরিয়া বিদ্যমান,সেগুলা দাঁতের উপর এক ধরনের আবরন তৈরী করে যাকে ডেন্টাল প্লাক বলে।

আমরা যখন অধিক পরিমানে কার্বোহাইড্রেট (শর্করা), বা অধিক চিনি যুক্ত খাদ্য গ্রহন করি তখন ডেন্টাল প্লাকে থাকা ব্যাকটেরিয়া সেটা ব্যাবহার করে ল্যাকটিক এসিড উৎপাদন করে।

সেই এসিড দাঁতকে আক্রমণ করে দাঁতের ক্ষয় বা গর্ত সৃষ্টি করে থাকে।

ব্যাকটেরিয়া পরবর্তীতে সেই গর্তের মাধ্য দিয়ে দাঁতের মজ্জায় বিদ্যমান স্নায়ুকে(পাল্প) সংক্রমণ করে (পাল্পাইটিস) এবং দাঁতের গোড়ায় পুজ(এবসেস) তৈরি  করতে পারে।

এবং এতে দাঁতে তীব্র ব্যাথা অনুভব হয়ে থাকে। 

লক্ষন কি?

১.দাঁতের ব্যাথা।

২.দাঁতে দৃশ্যমান গর্ত বা কেভিটি।

২.দাঁতের কেভিটি বা গর্তে খাবার জমে যাওয়া।

৩.ঠান্ডা,গরম বা মিস্টি জাতিয় খাবার খেলে দাঁতে সংবেদনশীলতা বা সেনসিটিভিটি হওয়া।

৪.মুখে দুর্গন্ধ।

৫.দাঁতের মাঝে বাদামী বা কালচে দাগ পরা।

ডেন্টাল ক্যারিসে ব্যাথার ধরন কেমন?

১.দাঁতে অবিরত ব্যাথা।

২.নির্দিষ্ট কারন ছাড়া ব্যাথা 

কিভাবে ক্যারিস প্রতিরোধ করা যায়?

দাঁতের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো মুখগহ্বর এর যত্ন নেওয়া। 

১.প্রতিদিন দুবার ফ্লোরাইডযুক্ত মাজন দিয়ে দাঁত মাজতে হবে।

২.ফ্লস বা ইন্টার ডেন্টাল ক্লিনার ব্যবহার করে দাঁত পরিস্কার রাখতে হবে।

৩.খাবার মধ্যে শর্করাযুক্ত খাবার নির্দিষ্ট মাত্রায় গ্রহণ করুন এবং অতিরিক্ত চিনি, উচ্চমাত্রায় এসিড যুক্ত খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন।

কিভাবে ডেন্টাল ক্যারিস নির্নয় করা যায়?

দন্ত চিকিৎসক মুখগহ্বর এর পরীক্ষা এবং এক্সরের মাধম্যে ক্যারিসের বিস্তৃতি নির্ণয় করতে পারেন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসার ধরন নির্নয় করতে পারেন।

দাতের গর্তের চিকিৎসা কি?

মনে রাখতে হবে দাতের চিকিৎসা যত তারাতাড়ি করা যায় চিকিৎসার খরচ ততো কম হয়। 

১.যদি ক্যারিস দাঁতের মজ্জা পর্যন্ত বিস্তৃত না হয় তবে

দাঁতের ক্যারিস সরিয়ে গর্তের  ফিলিং বা ভরাট করা অথবা দাতের উপর কৃতিম ক্রাউন স্থাপন করা।

২.যদি ক্যারিস দাঁতের মজ্জা অব্দি ছড়িয়ে পরে তবে দাঁতের মজ্জার চিকিৎসা বা রুট ক্যানেল  ট্রিটমেন্ট। 

৩.দাঁত তুলে ফেলা যদি দাত রাখা/চিকিৎসা করার মত অবস্থা না হয়।

 

কতদিন অন্তর চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন? 

বছরে দুইবার একজন বিডিএস ডিগ্রিধারী দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

লিখেছেন,
ডা ফেরদৌসী রশিদ
বি ডি এস
আমাদের প্রতিটি লিখা চিকিৎসক দ্বারা লিখিত এবং সম্পাদিত। এই ওয়েবসাইটে চিকিৎসক/ডাক্তার বলতে নুন্যতম এম বি বি এস বা বি ডি এস ডিগ্রিধারী ডাক্তারদের বোঝানো হয়। এই ওয়েবসাইটের সকল লেখা সচেতনতামূলক এবং চিকিৎসকের পরামর্শের বিকল্প নয়