From a Doctor

বুক জ্বলাপোড়া বা এসিডিটি কেন হয়, কি করবেন

বুক জ্বলাপোড়া বা এসিডিটি কেন হয়, কি করবেন

বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই  জ্বলাপোড়া সমস্যায় ভুগে থাকেন। এই সমস্যা সহ পাকস্থলীর আরো কিছু সমস্যাকে সাধারণ মানুষ গ্যাস্ট্রিক হিসেবে চিনে (যদিও সবগুলো গ্যাস্ট্রিক না)।  

আমাদের পাকস্থলীতে  খাদ্য পরিপাকের জন্য খুব শক্তিশালী এসিড থাকে।  এই শক্তিশালী এসিড  পাকস্থলী থেকে উল্টো খাদ্যনালীতে আসতে পারে না।  কিন্তু যাদের বুকজ্বলা সমস্যা হয়,  তাদের ক্ষেত্রে,  এই শক্তিশালী এসিড খাদ্যনালী দিয়ে  উঠতে থাকে যার কারণে রোগী বুকে জ্বালাপোড়া অনুভব করেন।

 কি কারনে হয়?

 অনেক মানুষের কোনো কারণ ছাড়াই এটা হতে পারে।  কিন্তু মূল কারণগুলো হলো-

  • ধূমপান
  •  শরীরের অতিরিক্ত ওজন
  •  খুব বেশি মশলাদার খাবার
  •  বিভিন্ন  পানীয় যেমন;  চা,  কফি,   পেপসি এবং কোকাকোলা জাতীয় ড্রিংক  ইত্যাদি।
  •  অতিরিক্ত মানসিক চাপ
  •  বিভিন্ন ব্যথার ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
  •  গর্ভধারণের কারণে
  • বুক ও পেটের সংযোগস্থলে এক ধরনের হার্নিয়া (হায়টাস হার্নিয়া)

লক্ষণসমূহঃ 

বুক জ্বলাপোড়ার মূল কারণ খাদ্যনালী দিয়ে পাকস্থলীর এসিড উপরে উঠে যাওয়া।  এটাকে  এসিড রিফ্লাক্স বলে। এতে নিম্নোক্ত লক্ষণসমূহ দেখা যায়

  •  বুকের মাঝখানে  জ্বালাপোড়া করা
  •  মুখে  তীব্র টক স্বাদ অনুভব হওয়া ( লেবুর রস এর মত)
  •  কোন কারন ছাড়াই কাশি হওয়া
  •  বারবার হেঁচকি ওঠা
  •   গলার স্বর বদলে যাওয়া
  •  মুখে দুর্গন্ধ
  •  পেট ফাঁপা

  এসব লক্ষণ খাওয়ার পর এবং ঘুমানোর সময় বাড়ে।

আপনি কি করবেনঃ

  • একসাথে বেশি খাবার খাবেন না
  •  কম কম করে কয়েক বারে খান
  • যেসব খাবারে আপনার লক্ষণগুলো বেড়ে যায় সেগুলো পরিহার করুন
  •  ঘুমানোর সময় বুক ও  মাথা আপনার কোমরের লেভেলের চেয়ে উপরে থাকতে হবে। এজন্য সম্ভব হলে বিছানার  মাথার অংশ একটু উঁচু করে রাখুন।
  •  শরীরের ওজন কমান
  •  অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেয়া থেকে বিরত থাকুন
  •  ঘুমানোর তিন থেকে চার ঘণ্টা আগে খাবার খেয়ে নিন
  •  ধূমপান বন্ধ করুন
  •  জর্দা খাওয়া বন্ধ করুন 

 কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

লম্বা সময় ধরে এই সমস্যা থাকলে,  এবং উপরিউক্ত পরামর্শ অনুসারে জীবন-যাপন করার পরও অবস্থার কোন উন্নতি না হলে চিকিৎসকের কাছে যান।এছাড়াও আপনার খাবার গিলতে সমস্যা হলে এবং  আপনার ওজন   হঠাৎ করে দ্রুত কমতে শুরু করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 এই সমস্যা নিয়ে প্রথমেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।  আপনার নিকটস্থ কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।  এই সমস্যায় ঔষধের চেয়ে আপনার জীবন যাত্রা পরিবর্তন বেশি কাজে আসবে। 

চিকিৎসক কি করবেনঃ

 চিকিৎসক আপনার লক্ষণ সমূহ বর্ণনা শুনে এবং আপনাকে পরীক্ষা করে দেখবেন। প্রয়োজনমতো কিছু টেস্ট করানোর  পরামর্শ দিতে পারেন।  আপনাকে কিছু ঔষধ লিখে দিবেন,  যেগুলো বলে দেয়ার নিয়ম অনুসারে খাবেন। 

সতর্কতাঃ

  আপনার  বুকজ্বলা সমস্যা  থাকা অবস্থায় যদি কাশি বা হেঁচকি সাথে রক্ত আসে তাহলে সাথে সাথে নিকটস্থ হাসপাতালে যান।